গেমিং পিসি তৈরী করতে বা কিনতে আমাদের অনেক দ্বিধাদ্বন্দে থাকতে হয়। অনেক সময় হয়তো এই বন্ধু, ওই বন্ধু, এই ভাই, ওই ভাই অন্য লোকের কাছ থেকে জেনে নিতে হয় যে কেমন ধরনের পিসি বানালে ভালোমানের একটা পিসি পাবো। বিশেষ করে কাস্টম পিসি তৈরিতে তো একাধিক
বিষয় বিবেচনা করতে হয়। এই পোস্টে জানবেন গেমিং পিসি তৈরী করতে যেসব বিষয় খেয়াল আমাদের খেয়াল রাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রসেসর
প্রি-বিল্ড বা কাস্টম-বিল্ড যেটাই হোক, গেমিং পিসি কেনার সময় আমাদেরকে প্রথম যে ফিচারটি দেখতে হবে সেটি হলো কম্পিউটার প্রসেসর। কেননা প্রসেসর এর উপর-ই নির্ভর করে আপনার গেমিং কেমন চলবে সেটা। বর্তমান সময়ে ২ থেকে ১৬ কোর এর সিপিইউ বা প্রসেসর পাবেন।
আর এটা থেকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সিপিইউ নির্বাচন করুন। তবে যদি আপনার বাজেট কম হয়, তবে মিনিমাম ৪ কোর প্রসেসর নির্বাচন করুন। বাজারে ২ ধরনের প্রসেসর পাওয়া যায় এ.এম.ডি ও ইন্টেল প্রসেসর। তবে এক্ষেত্রে এএমডি এর প্রসেসরগুলোতে অধিক কোর থাকে বলে এটাতে মাল্টিথ্রেডেড পারফরম্যান্স ভালো পাওয়া যায়। কেননা বেশিরভাগ আপডেটেড গেমগুলো মাল্টিপল কোর ব্যবহার করে ভালো পারফরম্যান্স এর জন্য। তবে ভাল মানের গ্রাফিক্স কার্ড বা জিপিইউ ব্যবহার করলে একই দামের অন্যান্য প্রসেসরে প্রায় একই পারফরম্যান্স পাওয়া যায়।
ভালো জিপিইউ থাকলে খুবই লেটেস্ট প্রসেসর চয়ন করা আবশ্যিক নয়। তবে সকল অ্যাপ ও গেম ভালোভাবে রান করতে চাইলে ভালো মানের প্রসেসর নির্বাচন করা উচিত। কেননা কিছু অ্যাপ সিঙ্গেল কোর ও কিছু অ্যাপ মাল্টিকোরে চলে, তাই প্রয়োজণীয় বা মানানসই প্রসেসর চয়ন করা ভালো পারফরম্যান্স পাওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হিসেবে মাথায় রাখতে হবে।
কম্পিউটার সাইজ
গেমিং পিসি তৈরী করার সময় কম্পিউটার বিল্ড পরবর্তী পিসির সাইজ মাথায় রাখা উচিত। বর্তমানে গেমিং পিসি বিভিন্ন শেপ ও সাইজে পাওয়া যায়। বড় ডেস্ক না থাকলে কিংবা ঘরে যদি যথেষ্ট জায়গা না থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাইজে ছোট কম্পিউটার বা সিপিইউ কেস নির্বাচন করতে পারেন। এটা নির্ভর করতেছে আপনার উপর ।
র্যাম
অধিক পারফরম্যান্স এর পাওয়া যাবে বেশি পরিমানের র্যাম নির্বাচন করলে এই ধারণাটিতে এখনো অনেকে বিলিভ করে। যেকোনো পিসির ক্ষেত্রে র্যাম গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটা নিয়ে চিন্তার প্রয়োজন নেই। কেননা কম্পিউটারের র্যাম এর দাম কম এবং এটি খুব সহজে পরিবর্তনযোগ্য। তাই কল অফ ডিউটি ওয়ারজোনের মত গেম এর সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস ৮জিবি র্যাম হওয়ায় স্বত্বেও আপনার ১৬জিবি র্যামের পিসিতে ল্যাগ করতে পারে।
কম্পিউটার স্টোরেজ
কম্পিউটার এর স্টোরেজ হিসেবে আপনি হার্ডডিস্ক ও এস.এস.ডি থেকে যে কোনোটি বা উভয়টি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে দামে একটু বেশি হলেও এস.এস.ডি ব্যবহার করলে কয়েকগুণ বেশি স্পিড পাওয়া যায়। আপনার যদি গেমিং এর পাশাপাশি অন্য কাজের জন্য অনেক বেশি স্টোরেজের প্রয়োজন হয়, তাহলে এসএসডি এর পাশাপাশি এক্সট্রা হার্ডডিস্ক ব্যবহার করতে পারেন। আর চেষ্টা করুন আপনার অপারেটিং সিস্টেম ও গেমগুলো এস.এস.ডিতে রাখার জন্য ভালো পারফরম্যান্স এর কথা মাথায় রেখে।
অন্যান্য পার্টস
মাউস ও কিবোর্ড তো লাগবেই পিসির পরিপূর্নতা দেওয়ার জন্য। আপনার বাজেট যদি কম হয়, তবে সবসময় মনে রাখবেন গুরুত্বপূর্ন পার্টসে অধিক ব্যয় করবেন। কেননা মাউস ও কিবোর্ড এর বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ। অনেকে শখের বসে লাইটিং বা আরজিবি মাউস ও কিবোর্ডকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তবে এটা আপনার উপর নির্ভর করে। আর গেমিং কম্পিউটার এর ক্ষেত্রে হেডফোনতে অবশ্যই লাগবে। যেকোনো গেমে বর্তমানে হেডফোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ভালো হয় কোনো হেডফোনে মাইকযুক্ত থাকা হেডফোন গুলো কিনলে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে হেডফোন ও বয়া বা মাইক আলাদা ও কিনতে পারেন।